বাংলা নতুন গল্প - মুক্তি চাই - লেখক : সুলতানা

মুক্তি চাই

লেখা:সুলতানা

ঘুম  থেকে উঠতেই ভিষন চেঁচামেচিরর আওয়াজ কানে আসলো।
হুড়মুড়িয়ে সোয়া থেকে উঠে বসে পরলাম।
কিছুই বুজতে ছিনা তাই একপা দু পা করে রুম থেকে বের হলাম,,,মনে খুব ভয় ও কাজ করছিলো।
আমাকে নিয়ে আবার আব্বু আম্মু ঝগড়া করছে না তো?
আব্বু আম্মুর ঝগড়া করার প্রধান ইস্যু আমি অবয়া সুলতানা।
বাবা মা য়ের খুব আদর একমাত্র মেয়ে ছিলাম তবে এখন আর নেই।
যেদিন আমার মা না ফেরার দেশে চলে গেছে সেদিন থেকেই আদরের আমি অনাদরে বড় হতে লাগলাম।
আর দু,বছর পরে যখন আমার মা আবার নতুন করে আমাদের পরিবারে আসলেন সেদিন থেকেই লক্ষি আমি অলক্ষিতে পরিনত হয়ে গেছি।
যাক, আসল কথায় আসি,,
 রুম থেকে বের হতেই আম্মুর চোখ পরলো আমার উপরে।
আম্মু:অইতো শাহজাদী আসছে,, জিজ্ঞেস কর তোমার মেয়ে কে
আব্বু: চুপ করবে তুমি?
আম্মু: কেন চুপ করবো? তোমার মেয়ে কে জিজ্ঞেস কর আসল সত্যি টা বেরিয়ে আসবে।
বাবা: সুলতানা, তুই টাকা নিয়েছিস।
আমি: না আব্বু আমি টাকা নেইনি আর কিসের টাকা?
আম্মু:ইসসস, যেনো ভাজা মাছ টাও উল্টিয়ে খেতে জানেনা।
আমি: আম্মু বিশ্বাস কর আমি কোন টাকা নেইনি,চখেও দেখিনি।
আব্বু, আব্বু আমি টাকা নেইনি।
আব্বু কিছু বলো আব্বু বিশ্বাস কর আমি টাকা দেখিনি,,
আব্বু চূপ করে রইলো
আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না কি হচ্ছে আমার সাথে ,,,
আর আম্মু বার বার বলছে টাকা গুলো ভালো ভালোয় দিয়ে দে,
 তারপর আম্মু খেপে গিয়ে আমার চুলের মুঠিতে ধরে টান মেরে আমাকে ফেলে দিলো আমি উপায় না পেয়ে আম্মুর পায়ে ধরে বলতে লাগলাম, মাগো আমাকে মাফ করে দাও, আমি ই টাকা নিছি।
আমি ভয়ে মিথ্যা বলছি কারন এর আগে একবার আমার মায়ের বোন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসছিল ওই মেয়ে ফোন চুরি করছিল কিন্তু ধরা পরে যায়। আম্মু তখন ওনার বোন কে বাচঁাতে সেই চুরির দায় আমাকে নিতে বলে আমি রাজি হইনি বলে আমাকে খুব মেরেছিল ছুড়া দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিল আর বলেছিল তোর ববাবাকেও মেরে ফেলবো তখন আমি বলে ছিলাম আমি চুর। আজকেও সেই ভয়ে রাজি হয়ে গেছি।
আমার আব্বু ও অচল স্ট্রোক করার পর থেকে তেমন হাটা চলা করতে পারেনা।
তাই আব্বু ও আম্মুকে খুব ভয় পায়।
আম্মু ও সব সময় বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার ভয় দেখায় আব্বুকে।
রাজি হওয়ার সাথে সাথে আম্মুর মুখের ভাষা অশ্লীলতার রুপ নিয়ে নিল।
আমি পা ধরে বল্লাম,, মাগো আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি কোন দিন আর এসব করবনা। মা গো চুলের মুঠিটা ছেড়ে দাও খুব লাগছে।
কিছুই বল্লনা ওনি ঘর থেকে বাহিরে চলে গেলেন
আমি মেজেতে পরে রইলাম।
আব্বু আমার কাছে এসে আমাকে টেনে তুলে রুমে নিয়ে গেলেন।
আব্বু: তুই কি সত্যি,,,,
না না আব্বু আমি টাকা নেইনি।
আম্মুর মার কে আমি খুব ভয় পাই।
আব্বুকে আর আগের কথা গুলো বলতে গিয়েও বলতে পারিনি।
বাহিরে আবার ও আম্মুর চেঁচামেচি শুরু হইছে,আব্বু আবার বাহিরে চলে গেলেন। আমি রুমে দরজা লাগিয়ে বসে রইলাম। ওঠোনে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরাও হাজির হলো। আম্মুর বক্তব্য শুনে সবাই আমাকে ছি ছি বলতে লাগলো।
আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আত্মহত্যা করবো।
কিন্তু আমি মাদ্রাসায় পরি তাই পরকাল আর আত্মহত্যা সম্পরকে জানি।
সে জন্য আত্মহত্যার মত জগন্য পাপ কাজ বেছে নিতে পারিনি।
দুই দিন ধরে এই বন্ধ ঘরেই আছি, বাহিরে যেতে লজ্জা লাগে কি করব আমি, কি ভাবে মুক্তি পাবো এই জিবন থেকে আছে কি কোন উত্তর কারো কাছে। বলে দাও আমায়। আমি মুক্তি চাই এই জীবন থেকে।
বিঃদ্রঃ আমাদের চার পাশে এমন হাজারো সুলতানা আছে। তাদের পাশে দাড়ান। এই সুলতানা হয়তো এখনো আল্লাহ্‌ কে বিশ্বাস করে বেচে আছে কিন্তু ক,দিন থাকবে সেটা হয়তো সে নিজেও জানেনা।। এসব সুলতানা দের সুন্দর পৃথিবী তে বেচঁে থাকার জন্য একটু সহানুভূতিশীল হই।

মন্তব্যসমূহ