মেন্টাল ক্রিমিনাল ( সাইকো )


শুক্ষকোন আহম্মেদ



"তুমি যদি আমার পারসোনাল লাইফ সম্পর্কে না জানতা তাহলে তোমাকে সাড়ে তিন হাত মাটি নিচে পুতে রাখতে হতো না।রাখতাম বুকের পাজিরে। কিন্তু তুমিতো আমার আসল চেহারা চিনে ফেলেছো।তাই তোমার সাথে দুনিয়ার লাইন কেটে দিয়েছি। তুমি ওই পারে যাও আর আমার জন্য অপেক্ষা করো। আমি আসবো হয়তবা এখন হয়তবা আরো পরে। আল্লাহ যখন চায়। তুমি মনে হয় শেষ। আমি জানি আমি লাশের সাথে কথা বলছি তারপরেও মনে অনেক শান্তি পাচ্ছি।
যেটা তোমাকে আরো আধঘণ্টা আগে বললে আরো শান্তি পেতাম।"
এসব বলতে বলতে করব দিলো তার বউকে। আমি যতটুকু তার বউ সম্পর্কে জানতাম মেয়েটা খারাপ ছিলোনা। "ভালো কাজ" এ বিশ্বাসী ছিলো। চাইতো তার বর যেন ভালো মানুষ হয়। সবসময় ভালোতে বিশ্বাসী হয়। কিন্তু ৩বাক্যের একটা শুনল আর নিজের বরের হাতে সে মরল। "প্রিয়াঙ্কা তোমার বর আন্ডার ওয়ার্ল্ডের প্রখ্যাত সন্ত্রাসী।খুন,চাঁদাবাজি,ধ্বর্ষন সব এনার আন্ডারে হয়। তুমি শেষ পর্যন্ত একটা সন্ত্রাসীর সাথে প্রেম ও বিয়ে করলে।" তিনটা ব্যাকের কথা শুনে প্রিয়াঙ্কা রক্ত উঠে গেল মাথায়। মনে যেই রক্ত মাথায় উঠেছে সেই রক্ত পানিতে রুপান্তরিত হয়ে তার চোখ দিয়ে পড়ছে। দৌড়ে গিয়ে তার বরের রুমে যায়। গিয়ে দেখে সে একটি লাশকে টুকরা টুকরা করছে। এ দেখে প্রিয়াঙ্কা বলল,

-এসব কি করছো তুমি??
-এখানতে যাও
-নাহ যাবো না আমি।
-এটা আমার পার্সোনাল লাইফ। ভালো থাকতে চাও তো যাও।
-আমি এই ভালো থাকাকে চাই না। তুমি আসলেই একটা মিথ্যুক।
-যা বলো আমাকে মিথ্যুক বলো না।
-যাকে যেই উপাধি দেওয়া উচিৎ সেটা আমি দিয়েছি।
-যাও এখান থেকে না হলে এই লাশটার মতো তোমার হাল হবে।
-কি!!! তুমি আমাকে মারবে। তুমিতো আমাকে ভালোবাসো।
-হ্যাঁ তোমার চেয়ও ভালোবাসি আমি এইটাকে।
-আজ নাহলে তুমি আমাকে মেরে দিলে কাল তুমি আরেক জনকে মেরে ফেলবা। কিন্তু এক সময় না এক সময় তুমি ধরা পড়বে পুলিশের অথবা গোয়েন্দাদের হাতে। সেদিনের অপেক্ষা আছি আমি।
-আর আমিতো এইটাই চাই। আর আমার ক্রাইমে আসার প্রধান লক্ষ হলো এমন জিনিয়াসের সাথে টক্কর নেওয়া যে আমাকে বেকায়দায় ফেলতে পারবে। আমাকে ধরতে চাইবে। হয়তবা সে আমাকে ধরতেও পারে
অথবা আমার হাতে মরতেও পারে।তোমার কাছে এখনো
একটা অপশন আছে।
-কি??
-এই আধা ঘণ্টার কথা পুরাপুরি ভুলতে হবে।
-মানে?
-মানে খুব সোজা ফরগেট, ফরগেট অ্যান্ড ফরগেট।
-কি ভুলব??
-এই যা হলো আমি যা করি। এটা তুমি ভুলে যাও আর এটাই তোমার জন্য মঙ্গলময়।
-আ-আচ্ছা। আমি ভুলে যাবো।
-গুড গার্ল। তুমি আমার অনেক সময় নষ্ট করে ফেলছ।
এখনো অনেক কাজ রয়ে গেছে।

প্রিয়াঙ্কার কাছে এই সত্যটা নিয়া বেচে থাকা আর বিনা অপরাধে কারাদণ্ডের মতো কষ্টকর। নিজের সাথে যুদ্ধ করে বেচেঁ থাকা ছাড়া আর কোন অপশন নেই।
পারিবারিক কাজ সেড়ে ঘুমানোর জন্য তাদের বেডে যাবে। কিন্তু আজ তার যেতে মন চাইছে না। মনে হচ্ছে ক্রাইম করছে সে। একটা ক্রিমিনালের সাথে থাকা আর ক্রাইম করা তার কাছে একই। রুমের কাছে গিয়ে দেখল বই পড়ছে তার বর আইমান। বেডের কাছে গিয়ে বলল,

-কি করছো???(প্রিয়াঙ্কা)
-ভাত খাচ্ছি।(আইমান। আজ খুব খিটখিটে মেজাজ)
-কোথায় তুমি তো বই পড়ছো।
-তাহলে দেখছো যেমন তাহলে জিজ্ঞাস করলো কেন??
-ওহ আই এম বেরি সরি।
-ইটস ওকে।
-আইমান তোমার মিশনের কি অবস্থা??
-কিসের মিশন?
-অই যে জিনিয়াসের খোজ।অই যে পুলিশ অথবা গোয়েন্দা যে তোমাকে ধরতে পারবে সে নাকি জিনিয়াস।
-ও অইটা। হ্যাঁ এই ব্যাপারে অনেক কিছু ভেবেছি। আমি বাংলাদেশের সেরা দশজন সৎ ও ডিটেকটিভ পুলিশ অফিসার ও গোয়েন্দাদের নাম নিয়ে একটি চার্ট করেছি।
এখনো ওদের সবার আত্মীয়কে মেরে দিবো এর মধ্য বরিশালের গোয়েন্দা শিরু আর পটুয়াখালীর সুজন আহমাদের পরিবারের সদস্যেকে মেরে দিয়েছি। এর মধ্যে হয়তবা কেউ জিনিয়াসের। যদি এখানে কোন জিনিয়াস না থাকে তাহলে চলে যাবো অন্য দেশে।জিনিয়াসের খোজে।

এসব কথা শুনে রাগে চোটে ছুরিটা আস্তে আস্তে হাতে নিলো প্রিয়াঙ্কা। অনেকক্ষন চুপ করে ছিলো প্রিয়াঙ্কা। অপেক্ষায় ছিলো অই সময়টার যখন তার স্বামী আইমান ঘুমিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে অপেক্ষার সমপ্তি ঘটল।ঘুমে সাগরে ডুবতে লাগল আইমান। আর বিন্দু পরিমান অপেক্ষা না করে ছুরি ডুকিয়ে দিলো তার পেটে প্রথমে ছুরিঘাতের পরও কোন রক্ত বের হয় নাই।
আরো পাচঁটা আঘাত করল কিন্তু রক্ত বের হচ্ছে না। তার মনে ভয় ও সন্দেহ ডুকলো। উপড়ের চাদরটা সড়িয়ে দেখে শুধু কোলবালিশ আছে নেই আইমান।
হঠাৎ হাত তালি দিতে দিতে আসে আইমান। প্রিয়াঙ্কা একরকম থথমতো খেয়ে যায়।আইমানে প্রিয়াঙ্কা উদ্দেশে বলে,
-আমি জানতাম তুমি খুব ভালো।ভালো মানুষ হিসাবে বাঁচাতে চাও আমাকে। এইগুলা নিয়ে তুমি বেচেঁ থাকতে পারবে না।তাই তুমি আমাকে মারার মতো সাহস দেখিয়েছো।
-আমাকে মাফ করে দেও।
-না না। এই আশা বাদ দেও যাও আমার ওপাড়ে যাও আর অপেক্ষা থাকো।

এই বলে পিছন থেকে রিভালবারটা বের করেই পুস.. পুস... দুইটা গুলি করল। একটা মাথায় আরেকটা বুকে।

কবর দেওয়া শেষ। আমি সামনে দাঁড়িয়ে একটা পাগলে বন্ধুত্ব হওয়া আর পাগল হয়ে মরে যাওয়া একেই।কি করার আছে? এসব দেখা ছাড়া আমার কিছুই করার নাই। তাকে আমি বললাম,

-আইমান আপনি কি মনে করে আপনাকে কেউ ধরতে পারবেন না?
-আমার মতো আইমান যদি আরেকটা থাকে তাহলে ধরতে পারবে।কারন আমার ব্রেন পৌর-ড্রেইন একই।
-ভালো করতাছিস না। এইগুলা যদি তোর মা জানতে পারে তাহলে তুই কি করবি?
-আমার মাকে মেরে দেবো।
-কি!!!
-হুম আমি আমার মাকেও মেরে দেবো।
-জিনায়াসের খোজের জন্য আমি সব করতে পারি।




মেন্টাল ক্রিমিনাল (সাইকো)
শুক্ষকোন আহম্মেদvlew writer faceboook profile

মন্তব্যসমূহ