হিরর | পর্ব ২



' এই ভাই চেইন ঠিক আছে কিভাবে? আপনি কি ঠিক করছেন। ' মোস্তফা খুবই ভয়ের সাথে বলল। মোস্তফার শরীর কড়া শীতের রাতেও তার শার্ট আর সাদা পায়াজাম পুরো ঘামে ভিজে গেছে।
' ভাই আপনি কি বলেন।  কখনও কি সম্ভব? এই রাতে আমি কি করে এটা করবো। আর আপনাকে আমি বাগানে পেয়েছি। ঠিক করার কোন প্রশ্নই আসছে না।'
' আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবোনা। ভাই পৃথিবীতে কারো কারোর।  মানুষ নিজের অস্ত্বিত ভুলে গেছে। মন + হুশ।  একটা মানুষের হুশ মানে বিবেক আর মন থাকা অত্যাবশ্যক।  তা না হলে সে কোন মানুষ না। সে প্রানী। আর আপনি আমাকে বাঁচিয়েছেন। আল্লাহ আপনাকে পাঠিয়েছে।  ভাগ্য খারাপ হলে হয়তো আজ আর আমার মার জন্য ঔষধ নেওয়া হতো না।  পড়ে থাকতাম বাগানের কোন এক কোণে। পোকা মাকড়ে সাপ বিচ্ছু আমাকে ধ্বংস করে দিতে বেশী সময় লাগাতো না। আচ্ছা আমি যাই।'
' এইযে ভাই। কোথাও যাচ্ছেন না আপনি।আজ রাত আমার এখানেই থাকতে হবে। যেতে চাইলে কি যেতে দেবো নাকি। এতো রাত বাড়ি ফিরতে পারবেন না। '
' না ভাই। আপনি বুঝতে পারছেন আমার মা খুব দুশ্চিন্তায় ভুগবেন। এমনেই খুব অসুস্থ তিনি। তার ঔষধ আনতেই সদরে গিয়েছিলাম। '
'সমস্যা কি আপনি  আন্টিকে ফোন দিয়ে বলে দেন যে আপনি আপনার বন্ধুর বাড়িতে আছেন।  আর আমাকে বন্ধু ভাবতে পারেন। ওকে দেওয়া যায়।'
' ওকে ' বলে তার মাকে ফোন দিলো মোস্তফা।"

' এখানে কোন সমস্যাতো আমি দেখি না। ' বলল সঞ্জু।
' পুরো কাহিনীটা আগে শোন। '
পানি খেয়ে আবার শুরু করলাম।
' আমি গল্প লিখে ভুলগুলো শুধরিয়ে গল্পটা সাথে সাথে পোষ্ট করলাম। যাইহোক গল্প আমার খুবই ভালো লাগছে কিন্তু হররতো তাই একটু আধটু ভয় রয়ে গেছে। কাহিনীটা শুরু তার পরের দিন সকাল  থেকে। সকাল থেকে আমি আমার ঘরে একটা কুচকুচে কালো বিড়াল।  এটার ডান পাশের চোখটা কেউ হয়তো নষ্ট করে দিয়েছে। শরীরটা অনেক মোটা মোটা সব মিলয়ে একটা ভয়ঙ্কর চেহারা। আর এই বিড়ালটা প্রায়ই আমার সেই গল্পের  বিড়ালটার মতোই। 'মিয়াও মিয়াও ' কঠিন ভাবে আমাকে ডেকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আরেকটা ব্যাপার আমি যেই গল্পটা লিখছিলাম সেটার নাম ' হিরর ' যার আভিধানিক অর্থ কাল বিড়াল বা খারাপ বিড়াল। যাইহোক আমার তা কিছু যায় আসচ্ছিলো না।আমি শুয়ে মোবাইল টিপছি। হঠাৎ আম্মুর ফোন।

' হ্যালো। আম্মু। '
' রায়হান একটু বাসায় আয় তো। '
' ভাড়া নাই। '
' সাইকেলটা নিয়ে আয়।  '
' এতো দূর। '
' আরে বেশী না। মাত্র ত্রিশ মিনিট পথ। '
' দেখছি ব্যাপারটা। '
' তোকে আসতে বলছি তুই আসবি। '
' ওকেই ওকেই। '

তুই নেই বলে আমি খুব বোরিং ফিল করছিলাম তাই বেশী দেরী না করে সাইকেলটা নিয়ে রুম তালা মেরে বাড়ির দিকে রওয়ানা দেই।সাইকেলটা খুব ভালো। মারাত্মক দ্রুত। চালাতে হয় কম। তার প্রায়ই বিশ মিনেটের মধ্যে দিয়ে বাড়ি পৌছে গেলাম।বাড়িতে আমার রিলেটিভ  এসেছে আমি তাদের আপ্যায়ন খাতির করে।কাজ শেষ করতে  রাত হয়ে গেলো।বাড়ি ভর্তি মানুষ তাই আমার ঘুমানো জন্য অনেক চাপাচাপি কর শুতে হবে। তাই চিন্তা করলাম আমার নিজস্ব রুমে গিয়ে ঘুমাই।  আম্মুর অনুমতি নিয়ে  নিলাম।আম্মু সহজে অনুমতি দিয়ে দিলো কারণে আজ ছাড়াও আমি আরো কয়েকবার  রাতে যাওয়া আসা করেছি। যাইহোক আমি সাইকেল আবার আমার মেসে বা রুমে আসার রওয়ানা দেই।
আমি হেডফোন কানে দিয়ে  জেমসের 'বাবা ' গানটা শুনছিলাম। হঠাৎ আমি একটু ভরকে যাই আমার সামনে থাকে একটা বিড়ালকে দেখে। তারপর আমি ব্রেক দিয়ে দেখলাম এই বিড়াল আজ সকালের বিড়াল। আর আমার হাতে একটা টর্চ লাইট ছিলো আমি  সেটা বিড়ালটার চোখের উপড় ফেললাম কিন্তু বিড়ালটার ভিতরে কোনো পরিবর্তন দেখতে পেলাম না। গল্পে মোস্তফার বিড়ালটির পাশ দিয়ে চলে যাই।  আমি কিন্তু মোস্তফার মতো এতো সাহসী না। হেডফোন কানে থেকে আর খুলি নি। 'বাবা' গানটি শেষে এবার এসেছে আইয়ুব বাচ্চুর 'সেই তুমি'।  আমার প্রিয় গান তাই এই নির্জন রাতে আমি বড় বড় গলায় পাগলের মতো গাইচ্ছি। খানিক্ষণিকটা পথ যাওয়ার আবার আমি দেখতে পাই সেই গল্পের বিড়ালটাকে। এবার আমি ব্যাপারটা প্রচন্ড সিরিয়াস ভাবে নিলাম।ভয়ে আর এই গরমে  আমি আরো অস্থির হিয়ে গেলামএবার সাইকেল ফুল স্প্রিডে চালাতে শুরু করলাম। এবার আমার হেডফোনে চলছে  'তুমি কেন বোঝনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়। ' আমি গানে হারিয়ে গেলাম আবারো।
গানটা আবরো জোর গলায় গাইতে শুরু করলাম। রাস্তা ছিলো গ্রামের ভিতরে দিয়ে যারো পাকা সড়ক। আমি আগের কাহিনীগুলো সব ভুলেই গেছি।হঠাৎ আমার আমার পাশে আমি যানবাহন অনুভব করলাম।  আমি পাশে ফিরে দেখি সেটা হলো আমার গল্পের সেই বিড়ালটা।  দৌড়াচ্ছে সে আমার সাইকেল ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আমি হার মানার পাত্র নই। অলরেডি আমি বুঝে গেছে আমার সাথে যা ঘটছে তা প্যারা নরমাল।
কিচ্ছুক্ষণ হাড্ডাহাডি রেস হলো। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ বিড়ালটি উধাও হয়ে গেলো।  কাহিনী ঘটছে আমার লেখা গল্পটার মতো। হঠাৎ অনুভব আমার সাইকেলের চেইন ছিড়ে গেছে। এটাই এক্সেপ্ট করেছিলাম।কিন্তু সাইকেলটা  কিছু দূর চলতে থাকে।  তারপর পড়ে যাই বাগানে আমি শুয়ে আছি। এখানো হেডফোনটা আমার কানের সাথে লেগে আছে আর গান চলছে ' Oh!  ALLAH I'm waiting for your call.'
আমি জোরে জোরে গাইছি।
আর হঠাৎ চিরচেনা  সে শব্দ,
'কেরে?'

#চলবে...

হিরর পর্ব ২

শোক্ষকোন আহম্মেদ

মন্তব্যসমূহ